২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

মার্কিন রাজনীতিতে দ্রুত প্রতিষ্ঠিত হবে মুসলিম প্রাধান্য!

ইলহান ওমর ও রাশিদা তলায়িব - ছবি : সংগৃহীত

যেসব মার্কিনি ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ এবং শরণার্থীদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান নিষেধাজ্ঞাকে সমর্থন করেন, তারাই আবার এক অদ্ভুত বিশ্বাস লালন করেন যে, বিশ্বের ১৮০ কোটি মুসলিম তাদের ঘৃণা করে। অথচ যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ৩৫ লাখ মুসলিম বিশ্বাস করে যে, এসব কথার মাধ্যমে ভীতি ছড়ানো হচ্ছে। কিন্তু এটাও সত্য, প্রায় ১০০ জন মুসলিম রাজনৈতিক নেতা এবার মার্কিন নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। ২০১৬ সালে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন মাত্র ১২ থেকে ১৫ জন মুসলিম নেতা।

জুলাই মাসে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস-এপি এই বিপুল মুসলিম প্রার্থীর সাক্ষাৎকার নিয়েছে। এপি তাদের রিপোর্টে উল্লেখ করে, এটা অবিকল ধর্মান্ধতা এবং ইসলামের প্রতি বিদ্বেষ ছড়ানোর প্রচেষ্টা ছাড়া কিছুই নয়। প্রতিবেদনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিভিন্ন মন্তব্য ও টুইটও স্থান পায়। সেখানে বলা হয়েছে, তাদের এসব কর্মকাণ্ডই বহু মুসলিমকে রাজনীতিতে প্রবেশের ব্যাপারে উৎসাহিত করছে। সেখানে মুসলিমরা নিজেদের রক্ষার জন্য নীতিগত বিষয়গুলোকে সামনে এগিয়ে নিতে নিজেরাই ভোটে দাঁড়াচ্ছে। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতিফলন ঘটছে এবং একই সাথে এর সুফল তাদের নিজ সম্প্রদায়েরই মানুষজনও পাবে।


ডেট্রয়েট-এর রাশিদা তলায়িব। সাবেক অঙ্গরাজ্য প্রতিনিধি এবং ফিলিস্তিন থেকে আগত এক অভিবাসীর বোন। তিনি মার্কিন ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো মুসলিম কংগ্রেস সদস্য হতে চলেছেন। কেনিয়া থেকে আসা শরণার্থী এবং সোমালি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক ইলহান ওমর। তিনিও সম্ভবত নভেম্বরের নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। তিনি মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের প্রতিনিধি কেইথ এলিসনের স্থলাভিষিক্ত হবেন। বেশির ভাগ মুসলিম প্রার্থী তাদের ধর্মীয় পোশাক পরে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন না। কিন্তু তারা ডেমোক্র্যাটের মতো প্রগতিশীল দলের প্ল্যাটফর্ম থেকে নির্বাচনে দাঁড়াচ্ছেন।

‘একটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, মানুষ আমাকে দেখছে এমন একজন হিসেবে যে জয়ী হয়ে তাদের জন্য কাজ করবে এবং সমাজকে আরো ভালো অবস্থানে নিয়ে যাবে। হোক না সে একজন মুসলিম শরণার্থী।’ টেলিফোনে আমাকে এ কথাগুলোই বলছিলেন মিস ওমর। তিনি যে এলাকা থেকে প্রতিনিধি হওয়ার জন্য লড়ছেন; তা খ্রিষ্টান সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা এবং এখানকার বেশির ভাগ মানুষ শ্বেতাঙ্গ। মিস ওমর বিশ্বাস করেন, তার এলাকার মানুষজন তার ধর্ম কিংবা অন্য কোনো পরিচয়কে প্রাধান্য দেবে না। বরং তারা দেখবে, তিনি তাদের প্রত্যাশার কথা ওয়াশিংটন পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পারেন কি না।

এসব অভিজ্ঞ মুসলিম নেতা নিশ্চয়ই শুরুতে বলেননি যে, কেউ ধর্ম বিশ্বাসের প্রতি অনুরাগী হলেই কেবল সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রতি প্রতিশ্রুতিশীল হয়ে থাকেন। কিন্তু একটা সময় যখন বহু মানুষ তাদের সামনে এটা উপস্থাপন করে ভণ্ডামি করেছে যে, খ্রিষ্টান ধর্মীয় অধিকারগুলোই এখানে প্রতিফলিত হচ্ছে, তখনই তারা সর্বশেষ সাবধানবাণীটি দিয়েছেন যে, ধর্মের প্রতি অনুরাগী হওয়ার প্রয়োজন নেই এবং হওয়া উচিতও নয়; বরং নারী, সংখ্যালঘু ও দরিদ্রদের ওপর হামলা হলে হাতে হাত রেখে তা প্রতিহত করো।

‘এটি এমন কোনো বিষয় নয় যে, আপনি বের হয়ে এলেন আর তাতেই আপনার ধর্মীয় বিশ্বাস প্রকাশ হয়ে গেল’। মিস তলায়িব সিএনএনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আরো বলছিলেন, ‘সব সময় মানুষকে বলি যে, আমি যে রকম সচেতনভাবে, গুরুত্বের সাথে আমার ধর্মীয় বিধান মেনে চলি একইভাবে মানুষের সেবাও করব।’ মিস ওমর তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রার্থীকে কমপক্ষে ২০ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছেন। ভোটারদের প্রতি তার প্রতিশ্রুতি ছিল, তিনি নির্বাচিত হলে শিক্ষার্থীদের ঋণ মওকুফ করবেন, ন্যূনতম বেতন বাড়িয়ে দেবেন এবং এই অঙ্গরাজ্যে আরো অধিক শরণার্থীকে গ্রহণ করবেন।

‘ইসলামই আমাকে এই শিক্ষা দিয়েছে যে, সমাজের জন্য কাজ করতে হবে’। মিস ওমর আমাকে আরো বলেন, ‘ইসলামের ধর্মীয় বিশ্বাসের একটি বড় শিক্ষা হলো, আপনার প্রতিবেশী যদি পেট ভরে খেতে না পায়, তাহলে আপনি ভরা পেটে ঘুমাতে যেতে পারেন না।’

আবদুল আল সায়েদ। তিনি সম্প্রতি মিশিগানের গভর্নর পদে প্রার্থিতার দৌড়ে হেরে গেছেন। কিন্তু এরই মধ্যে তিনি পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটি-পিএসির মাধ্যমে একজন উদার প্রার্থীর জন্য সমর্থন চাওয়ার কাজ শুরু করেছেন। তিনি ‘খোলামেলাভাবে, সততার সাথে এবং কারো প্রতি করুণা প্রার্থনা না করেই’ নিজেকে একজন মুসলিম হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি আমাকে বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন ‘নাগরিক সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার জন্য দায়িত্ব পালন করতে হয়’। ইসলামের মূল্যবোধগুলো তাকে রাজনীতিতে আরো এগিয়ে দিয়েছে।

অথচ মিস ওমর ও ড. এল সাঈদ দু’জনই বলছিলেন, কিছু সমালোচক তাদের ধর্মীয় পরিচয়কে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবহারের চেষ্টা করেছেন। ড. সাঈদ বলছিলেন, ‘ইসলামভীতি খুবই প্রান্তিক পর্যায় থেকে এসেছে।’ তারা আমাদের জ্বালাতন করেছেন মূলত অতি-রক্ষণশীল রাজনীতিক লরা লুমারের মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে। লুমার পুরো দেশ ঘুরে বেড়িয়েছেন এটা দেখার জন্য যে, কতজন মুসলিম প্রার্থী নির্বাচনে দাঁড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এমনকি তারা প্রার্থীদের প্রচারণায়ও বাধা দিয়েছেন এবং জিজ্ঞেস করেছেন তারা ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসকে সমর্থন করেন কি না।

মিস ওমর ভয় পাওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘আমরা তাদের যা বলতে চেয়েছি, তাই বলেছি। তারা আমাদের এভাবে ভয় দেখাতে পারবেন না। একই সাথে আমরা সাধারণ মানুষের সাথে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করছি আর তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছি। সেটা থেকেও আমাদের বিরত রাখতে পারবেন না।’

দুর্ভাগ্যক্রমে, এখনো বহু খ্রিষ্টান রিপাবলিকান ভোটার মুসলিমদের নানা কারণে ভয় পাচ্ছেন। ‘মুসলিম অ্যাডভোকেটস’ নামের একটি অলাভজনক সংগঠন ‘রানিং অন হেট ২০১৮’ নামে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা যায়, মুসলিমদের বিরুদ্ধে নানা রকম বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে কমপক্ষে ৮০টি প্রচারণা চালানো হয়েছে মার্কিন মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে আগে। মুসলিমবিরোধী বেশির ভাগ প্রচারণা চালিয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থীরা। ইভানজেলিকাল খ্রিষ্টান নেতা ফ্র্যাঙ্কলিন গ্রাহাম বলেছেন, ইসলাম হচ্ছে ‘শয়তানের ধর্ম’। ড. আল সায়েদ নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর, ভার্জিনিয়া থেকে সিনেট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী রিপাবলিকান প্রার্থী কোরি স্টুয়ার্টের টুইটার পেজে একটি বার্তা লক্ষ করেছেন।

সেখানে লেখা ছিল ‘মিশিগানের ভোটাররা এরই মধ্যে একজন চরম বামপন্থী কমিউনিস্টকে নির্বাচিত করেছে।’ মন্তব্যটি পোস্ট করার পরপরই সরিয়ে নেয়া হয় এবং এরপর মি. স্টুয়ার্ট বলেন, তার অ্যাকাউন্টে প্রবেশাধিকার আছেÑ এমন কেউ এই মন্তব্যটি পোস্ট করেছিল। ক্যালিফোর্নিয়ার রিপাবলিকান সমর্থক ডানকান হান্টার এরই মধ্যে আক্রমণাত্মক প্রচার-প্রচারণায় অর্থ জোগান দেয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। তিনি তার প্রতিদ্বন্দ্বীর উদ্দেশে বলেছেন, ফিলিস্তিনি মুসলিমদের সাথে তার পূর্বপুরুষের যোগাযোগ থাকার কারণে এবং তার দাদা ১৯৭২ সালের মিউনিখ অলিম্পিক অনুষ্ঠানে সন্ত্রাসী হামলায় জড়িত থাকার কারণে ‘আম্মার ক্যাম্পা-নাজ্জার’ আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি ছিলেন। (ক্যাম্পা-নাজ্জার একজন খ্রিষ্টান এবং তার দাদা তার জন্মের ১৬ বছর আগে মারা যান। কিন্তু এর পরও তাকে এমন অপবাদ সইতে হলো। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিশ্চিতভাবেই রাজনৈতিক আশ্রয়ের আশায় যুক্তরাষ্ট্রের দিকে এগিয়ে যাওয়া মধ্য আমেরিকার অভিবাসীদের এই ‘বহরে’র কেউ নন।)

আমরা শুধু একটি কথাই মনে করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছি যে, ১৯৫০ সালে ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের বিরুদ্ধে একধরনের প্রতিরোধ গড়ে উঠেছিল। তখন জন এফ কেনেডি ভোটারদের ভয় দূর করার জন্য এবং তাদের উৎসাহিত করতে বলেছিলেন, ‘তিনি ক্যাথলিকদের কোনো প্রেসিডেন্টপ্রার্থী’ নন বরং ‘তিনি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির একজন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী এবং ধর্মের দিক থেকে ক্যাথলিক খ্রিষ্টান’। সেবার তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন এবং বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক-চতুর্থাংশ সিনেট সদস্য আর সুপ্রিম কোর্টের ছয়জন বিচারপতি ক্যাথলিক খ্রিষ্টান।

হানা আলী, টেনেসির আইন পরিষদের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি প্রেসিডেন্ট কেনেডির সূত্র ধরেই কথা বলছিলেন। তিনি আমাকে বললেন, তিনি একজন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়ছেন এবং একজন গর্বিত নাগরিক, গর্বিত মার্কিন এবং একজন মুসলিম।

টেনেসিতে তিনি একেবারে চোখের সামনে আফিমের নেশার কারণে বহু মানুষের ধ্বংস দেখেছেন। এর বিপরীতে, নাগরিকদের স্বাস্থ্যবীমা থেকে শুরু করে কোনো প্রতিকারমূলক ব্যবস্থাই রাষ্ট্র করতে পারেনি। তিনি বলছিলেন, উদারনৈতিক ডেট্রয়েট বা নিউ ইয়র্ক কিংবা ট্রাম্প সমর্থকদের এড়িয়ে যাওয়ার বিলাসবহুল কোনো প্রগতিশীল মানুষের নেটওয়ার্ক তার নেই। এর পরিবর্তে তার সাথে আছেন ড. আলীর মতো একজন গর্বিত অভিবাসী যিনি পেশায় ডাক্তার, স্বাস্থ্য সেবাদানকারী ব্যক্তি। ড. আলী তার সাথে প্রতিটি বাড়ির দরজায় গিয়ে কড়া নাড়ছেন, হাসি মুখে কথা বলেছেন ও কোলাকুলি করেছেন আর ডেমোক্র্যাটিক দলের হয়ে ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করেছেন।

জয়-পরাজয় যাই হোক, তিনি নির্বাচনে প্রচারণা চালিয়েছেন তার সন্তান ও পরবর্তী প্রজন্মকে সাহস জোগানোর জন্য, বলছিলেন হানা আলী। ‘মধ্য টেনেসিতে বসবাসরত এই নারী ডেমোক্র্যাটিক দলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এটা দেখার পর বহু মুসলিমের জন্য, পরবর্তী প্রজন্মের জন্য এবং কমিউনিটির বাসিন্দা যারা দূর থেকে দেখছেন, তাদের জন্য এমন আরো বহু সম্ভাবনার দরজা খুলে যাবে,’ যোগ করেন তিনি।

এখানকার মুসলিমরা নির্বাচনে দাঁড়াচ্ছেন এবং সামান্য কয়েকজন ওয়াশিংটন পর্যন্ত যেতে পারছেন। মুসলিমরা এখানে যা কিছুই করতে পারছেন, বহু কংগ্রেস সদস্য আরো দীর্ঘ সময়েও এতটুকু করতে পারেন না। এখানে আমাদের একটাই স্লোগান : ‘মানুষের সেবা করার মাধ্যমে আল্লাহর এবাদত করো।’ 
লেখক : নাট্যকার, আইনজীবী ও কলামিস্ট
নিউ ইয়র্ক টাইমস থেকে ভাষান্তর করেছেন মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম


আরো সংবাদ



premium cement
‘ট্রাম্পের সাথে অভিন্ন ক্ষেত্র খুঁজে পাবেন অধ্যাপক ইউনূস’ তাজিকিস্তানকে হারাল বাংলাদেশ ছাত্র-জনতা বুকের রক্ত দিয়ে দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করেছে : মির্জা ফখরুল খালেদা জিয়ার সেনানিবাসের বাড়ি ফেরতের দাবি জানালেন আলাল টানা দুই ওভারে ২ উইকেট শিকার তাসকিনের ‘প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি মানবিক মূল্যবোধের শিক্ষা দেয়া প্রয়োজন’ আমতলীতে কুকুরের কামড়ে ২৭ জন হাসপাতালে গুমের সাথে জড়িতরা রাজনীতিতে ফিরতে পারবে না : প্রেস সচিব আরো ৯ দেশকে ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকার দিচ্ছে চীন জামায়াত দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে চায় : সেলিম উদ্দিন কেউ বলতে পারবে না ১০ টাকার দুর্নীতি করেছি : মাসুদ সাঈদী

সকল